আজ ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

গ্রেফতার
গ্রেফতার

বিদেশী পিস্তল, একটি রিভলবার, ১২ রাউন্ড গুলিসহ ৩ ডাকাত গ্রেফতার

সাভার প্রতিনিধি:

সাভারের আমিনবাজার এলাকায় ইতালি প্রবাসীকে প্রকাশ্যে গুলি করে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

এসময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দুটি বিদেশী পিস্তল, একটি রিভলবার, ১২ রাউন্ড গুলি, ছুরি, লোহার পাইপ ও লুন্ঠিত ৫০ হাজার টাকা।

শনিবার প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করে র‌্যাব-৪ এর মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান চৌধুরী।

গ্রেফতাররা হলেন: পটুয়াখালী জেলার মোস্তাফিজুর রহমান, বরিশাল জেলার মোহাম্মদ নাসির ও একই জেলাল আব্দুল বারেক সিকদার।

র‌্যাব জানায়, গত ২৮ অক্টোবর কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা প্রবাসী আমান উল্লাহ তার স্ত্রীকে নিয়ে সাভারের আমিনবাজারের একটি ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের জন্য আসেন। পরে বাড়ি নির্মাণের জন্য ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা উত্তোলন করে স্ত্রীর ভ্যানিটি ব্যাগে রাখেন। এরপর একটি ট্যাক্সিক্যাব ভাড়া করে কেরানীগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এসময় ভাকুর্তা লোহার ব্রিজ এলাকায় পৌছলে তাদের অনুসরণ করে আসা তিনটি মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকার তাদের গতিরোধ করে। ডাকাতদল প্রকাশ্য দিবালোকে এলোপাথাড়ি গুলি করে এতে প্রবাসী আমান উল্লাহ বাম পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। পরে ব্যাগে থাকা ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা ছিনিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ভুক্তভোগী আমানুল্লাহ’কে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এঘটনায় ওই দিন রাতে সাভার মডেল থানায় ভুক্তভোগীর স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি মামলা রুজু করেন।

র‌্যাব আরো জানায়, সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রটিকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে ঘটনার দিন থেকেই মাঠে নামে র‌্যাব-৪ এর একটি চৌকস আভিযানিক গোয়েন্দা দল। ছায়া তদন্তের শুরুতেই ব্যাংকের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে ক্যাপ পরিহিত এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়। এরই সূত্র ধরে শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে প্রাইভেট কারযোগে ডাকাতি প্রস্তুতির গোপন খবরে সাভারের বিরুলিয়া জোড়া ব্রিজ এলাকায় অভিযান চালায় র‌্যাব। এসময় ডাকাতদলের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করতে পারলেও ৬/৭জন পালিয়ে যায়। গ্রেফতার ডাকাতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় দুটি বিদেশী পিস্তল, একটি রিভলবার, ১২ রাউন্ড গুলি, ছুরি, লোহার পাইপ ও লুন্ঠিত ৫০ হাজার টাকা।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার তিন ডাকাত র‌্যাবকে জানায় , তারা ছদ্মনাম নামধারী ১০-১২ জনের আন্তঃজেলা সশস্ত্র দুর্র্ধর্ষ ডাকাত দলের সদস্য। দলকে তারা কোম্পানি বলে। প্রত্যেক সদস্যের একটি করে ছদ্মনাম থাকে।

এ দলের অন্যতম সদস্য ব্যাংকে সেদিন ক্যাপ পরিহিত অবস্থায় ছিল এবং ব্যাংকের টাকা উত্তোলনকারীদের দিকে তীক্ষ্ণ নজর রেখে বাইরে মোটরসাইকেলে ওৎ পেতে থাকা নাসির সহ তার অন্যান্য সহযোগীদের’কে তথ্যটি জানায়। গ্রেফতারকৃত আসামী বারেক সিকদারমূলত ছিলেন ডাকাতদের অস্ত্র ও ছিনতাইকৃত টাকা বহন করার কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেট গাড়ির চালক। তার গাড়ীটি ডাকাতির কাজে অন্যান্য সহযোগীদের অস্ত্রসহ বহন করে আসছিলো। জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় তারা ডাকাতির সময় নির্দিষ্ট মোবাইল ফোন ও নাম্বার ব্যবহার করতো এবং ডাকাতি শেষে সেসব মোবাইল ফোন-সিম নষ্ট ও ব্যবহৃত জামা-কাপড় ফেলে দিতো।

র‌্যাব-৪ এর সহকারী পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান চৌধুরী জানান, গ্রেফতার আসামীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, ডাকাতি ও হত্যা মামলা রয়েছে। সেসব মামলায় জামিন পেয়ে তারা পুনরায় একই কর্মে লিপ্ত হয়। সেদিন ডাকাতিকৃতটাকা ১০ জনের মাঝে ৫০ হাজার করে বন্টন করে দেয়া হয়। গ্রেফতার আসামীরা উক্ত ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত মর্মে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে।

উপরোক্ত বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে ও ডাকাতির প্রস্তুতি ধারায় পৃথক দুটি মামলা প্রক্রিয়াধীন। এ ডাকাত চক্রের সাথে জড়িত অন্যান্য পলাতক আসামীদের গ্রেফতারে র‌্যাবের সাড়াশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

আরো পড়তে ক্লিক করুন

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap